Tuesday, July 10, 2012

একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)


একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত আবু হুরইরহ রদিয়াল্লহু নহু (أبىْ هريْرة رضى الله عنْه) বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, তোমরা গরীব লোকদের ভালবাস, তাহাদের নিকটে বস এবং আরবদের অন্তর দিয়া ভালবাস আর যে দোষত্রুটি তোমাদের মধ্যে আছে উহা যেন অন্যদেরকে দোষারোপ করা হইতে তোমাদেরকে ফিরাইয়া রাখে (হাকেম)


একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত রফেইবনে খদীজ রদিয়াল্লহু নহু (رافع بْن خديْجٍ رضى الله عنْه) বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, আল্লহ তায়ালা যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন তখন তাহাকে দুনিয়া হইতে এমন ভাবে বাঁচাইয়া রাখেন যেমন তোমাদের কেহ রোগীকে পানি হইতে বাঁচাইয়া রাখে (তাবারানী)


একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত সাঈ ইবনে আবু সাঈ রহমাতুল্লহ লাইহি বলেন, হযরত আবু সাঈ খুদরী রদিয়াল্লহু নহু (أبى سعيْدٍ الْخدْرىّ رضى الله عنْه) রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে নিজের (অভাব ) প্রয়োজনের কথা প্রকাশ করিলেন রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিলেন হে আবু সাঈদ! সবর কর কেননা আমাকে যে, মুহাব্বাত করে তাহার দিকে দরিদ্রতা এইরূপ দ্রুতগতিতে আসে যেইরূপ উঁচু মাঠ উঁচু পাহাড় হইতে ঢলের পানি নীচের দিকে দ্রুতগতিতে আসে (মুসনাদে আহমাদ)


একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত আবু সাঈ রদিয়াল্লহু নহু (أبى سعيْدٍ رضى الله عنْه) হইতে বর্ণিত আছে যে, আমি রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম কে এরশাদ করিতে শুনিয়াছি, হে আল্লহ! আমাকে মিসকীন-(স্বভাব) বানাইয়া জীবিত রাখুন, মিসকীন অবস্থায় দুনিয়া হইতে উঠান এবং মিসকীনদের দলভূক্ত করিয়া আমার হাশর করুন (হাকেম)


একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত ব্দুল্লহ ইবনে মর রদিয়াল্লহু নহুমা (عبْد الله بنْ عمْرو رضى الله عنْهما) বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, কিয়ামাতের দিন আমার উম্মতের কিছু লোক এমন অবস্থায় আসিবে যে তাহাদের নূর সূর্যের আলোর ন্যায় হইবে আমরা আরজ করিলাম, হে আল্লহর রসূল! সমস্ত লোক কাহার হইবে? এরশাদ করিলেন দরিদ্র মুহাজির হইবে, যাহাদিগকে মুশকিল কাজে আগে রাখিয়া তাহাদের মাধ্যমে আত্ম্ররক্ষার ব্যবস্থা করা হইত তাহাদের কাহারও মৃত্যু এমতাবস্থায় হইত যে, তাহার আশা তাহার অন্তরেই থাকিয়া যাইত তাহাদিগকে জমিনের বিভিন্ন জায়গা হইতে আনিয়া একত্রিত করা হইবে (মুসনাদে আহমাদ)

একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত ব্দুল্লহ ইবনে মর রদিয়াল্লহু নহুমা (عبْد الله بنْ عمْرو رضى الله عنْهما) হইতে বর্ণিত আছে যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, তোমরা কি জান যে, আল্লহ তায়ালার মাখলুকের মধ্যে হইতে সর্বপ্রথম কাহারা জান্নাতে প্রবেশ করিবে? সাহাবাহ কেরাম রদিয়াল্লহু নহুম আরজ করিলেন, আল্লহ তায়ালা তাঁহার রসূলই অধিক জানেন রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিলেন যে সমস্ত লোক সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করিবে তাঁহারা হইল দরিদ্র মুহাজিরগণ যাহাদের মাধ্যমে সীমান্ত রক্ষা করা হয়, কঠিন কষ্টকর কাজে (তাহাদিগকে সম্মুখে রাখিয়া) তাহাদের মাধ্যমে আত্ম্ররক্ষা করা হয় তাহাদের মধ্যে যাহার মৃত্যু আসে (সে এমন অবস্থায় মারা যায় যে) তাহার আশা আকংখা তাহার অন্তরেই থাকিয়া যায় যে আশা সে পূরণ করিতে পারে না আল্লহ তায়ালা (কিয়ামাতের দিন) ফেরেশতাদের মধ্য হইতে যাহাকে ইছা আদেশ করিবেন, তোমরা তাহাদের নিকটে যাও এবং তাহাদিগকে সালাম দাও ফেরেশতারা (আশ্চর্য হইয়া) আরজ করিবেন, হে আমাদের রব! আমরাতো আপনার আসমানের অধিবাসী আপনার শ্রেষ্ঠ মাখলুক, (ইহা সত্ত্বেও) তাহাদিগকে সালাম করিবার আদেশ করিতেছেন (ইহার কারণ কি)?  আল্লহ তায়ালা বলিবেন (ইহার কারণ হইল) ইহারা আমার এমন বান্দা ছিল যাহারা একমাত্র আমারই ইবাদাত করিত, আমার সহিত অন্য কাহাকেও শরিক করিত না, তাহাদের মাধ্যমেই সীমান্ত রক্ষা করা হইত, মুশকিল কাজে (তাহাদিগকে সম্মুখে রাখিয়া) তাহাদের মাধ্যমেই অপছন্দনীয় হইতে আত্ম্ররক্ষার কাজ লওয়া হইত তাহাদের মধ্যে যাহার মৃত্যু আসিত তাহার মনের আশা মনেই রহিয়া যাইত; সে উহা পূরণ করিতে পারিত না  রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিলেন, তখন ফেরেশতারা তাহাদের নিকট প্রত্যেক দরজা দিয়া এই কথা বলিতে বলিতে প্রবেশ করিবে যে, তোমাদের সবর করার কারণে তোমাদের প্রতি সালাম শান্তি বর্যিত হউক এই জগতে তোমাদের পরিনাম কতই না উত্তম! (ইবনে হিব্বান)


একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত ব্দুল্লহ ইবনে মর রদিয়াল্লহু নহুমা (عبْد الله بنْ عمْرو رضى الله عنْهما) হইতে বর্ণিত আছে যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, কিয়ামাতের দিন যখন তোমরা জমা হইবে তখন ঘোষণা করা হইবে যে, এই উম্মতের দরিদ্র গরীব লোকেরা কোথায়? (এই ঘোষণার পর) তাহারা দাঁড়াইয়া যাইবে অতঃপর তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করা হইবে, তোমরা কি আমাল করিয়াছিলে? তাহারা বলিবে হে আমাদের হে আমাদের রব! আপনি আমাদিগকে পরীক্ষা করিয়াছেন আমরা সবর করিয়াছি; আপনি আমাদের ব্যতীত অন্য লোকদের মাল রাজত্ব দান করিয়াছেন আল্লহ তায়ালা বলিবেন তোমরা সত্য বলিতেছ নবী করীম সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, সুতরাং সমস্ত লোক সাধারণ লোকদের আগে জান্নাতে দাখিল হইয়া যাইবে আর হিসাব কিতাবের কঠোরতা মালদার শাসকদের জন্য থাকিয়া যাইবে (ইবনে হিব্বান)


একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত আবু হুরইরহ রদিয়াল্লহু নহু (أبىْ هريْرة رضى الله عنْه) বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, দরিদ্ররা ধনীদের আধাদিন পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে আর আধা দিনের পরিমাণ পাঁচশত বছর হইবে (তিরমিযী)

ফায়দাঃ পূর্ববর্তী হাদীসে বলা হইয়াছে দরিদ্র ধনীদের তুলনায় পাঁচশত বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করিবে ইহা হইল অবস্থায় যখন ধনী দরিদ্র উভয়ের মধ্যে মালের আগ্রহ থাকে আর এই হাদীসে বলা হইয়াছে পাঁচশত বছর আগে জান্নাতে যাইবেইহা অবস্থায় যখন দরিদ্রদের মধ্যে মালের আগ্রহ থাকিবে না (জামেউল উসূল, ইবনে আছীর)

একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত জাবের ইবনে ব্দুল্লহ রদিয়াল্লহু নহুমা (جابر بْن عبْد الله رضى الله عنْهما) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, মুসলমান দরিদ্রগণ মুসলমান ধনীদের চল্লিশ বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে (তিরমিযী)

একরামে মুসলিমঃ (মুসলমানের মর্যাদা)

হযরত ইবনে ব্বাস রদিয়াল্লহু নহুমা (ابْن عبّاس رضى الله عنْهما) বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু লাইহি ওয়া সাল্লাম কাবার দিকে লক্ষ করিয়া (শওক আনন্দের আতিশয্যে) এরশাদ করিয়াছেন, লা-ইলাহা ইল্লাহ, (হে কাবা!) তুমি কতই না পবিত্র, তোমার খুশবু কতই উত্তম এবং তুমি কতই না মর্যাদার যোগ্য; (কিন্তু) মুমিনের মর্যাদা সম্মান তোমার চাইতেও বেশি আল্লহ তায়ালা তোমাকে মর্যাদার যোগ্য বানাইয়াছেন (এমনি ভাবে) মুমিনের মাল, রক্ত ইজ্জাত আব্রুকেও মর্যাদার যোগ্য বানাইয়াছেন আর (এই মর্যাদার কারণে) এই বিষয়ও হারাম করিয়া দিয়াছেন যে, আমরা কোন মুমিনের ব্যাপারে সামান্যতমও খারাপ ধারণা করি (তাবারানী, মাজমায়ে যাওয়ায়েদ)




No comments:

Post a Comment